পোষ্য
Let us save animals অবশেষে মাইলস পেল ঘর

Let us save animals এই প্রসঙ্গে এবার বলব মাইলস নামে এক সারমেয়কে উদ্ধারের ঘটনা। যত বার তাকে ধরতে যাওয়া হয় সে পালিয়ে যায়। শুরুতে ফেসবুক থেকে মেগান তার বিষয়ে প্রথম জানতে পেরেছিল। পুরো এক বছর ধরে মাইলস রাস্তায় রাস্তায় অনাথের মত ঘুরে বেড়িয়েছে। একদিন সকালে মেগান ক্যালিফোর্নিয়ার রাস্তায় মাইলসকে দেখতে পায়। তখনই ঠিক করে নেয় মাইলসকে যে করে হোক বাঁচাতেই হবে। এভাবে রাস্তায় ঘুরলে ওর শারীরিক ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা যেমন থাকে তেমনই থাকে ওর মৃত্যুরও সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
Let us save animals মেগানের চিন্তা ছিল মাইলসের জন্য একটি নিশ্চিন্ত আশ্রয়
এবার মেগানের মাথায় চিন্তা এলো সত্যিই কি মাইলসের জন্য কোন নিশ্চিন্ত আশ্রয় পাওয়া যাবে? কেউ কি নেবে তার দায়িত্ব? গাড়ি থেকে নেমে মাইলসের দিকে একটু একটু করে এগিয়ে যায় মেগান। তাকে খাওয়ানোর চেষ্টা করে। ততক্ষণে মেগান ভেবে নিয়েছে যেভাবেই হোক মাইলসকে সে এই অস্বাস্থ্যকর অপরিচ্ছন্ন জীবন থেকে উদ্ধার করবে। চেষ্টা করলে নিশ্চয় মাইলসের জন্য একটা পরিবারও ঠিক খুঁজে পাওয়া যাবে যেখানে সে নিঃসঙ্কোচে নির্দ্বিধায় থাকতে পারবে।
তবে সমস্যা একটা ছিল। মাইলস খুব বেশি কাছে ঘেঁষতে দিচ্ছিল না মেগানকে। মেগানের বাড়িয়ে দেওয়া কুকিজ নিচ্ছিল তবে কিছুতেই গলায় বাকলস পরাতে দিচ্ছিল না। তার মনে সন্দেহ যে মেগান তাকে বন্দি করতে এসেছে। ভাল করে বাকলস শুঁকে তার মনে সন্দেহ আরও বেশি করে দানা বাঁধে। মেগান যত এগোয় সে তত পিছোয়। সমস্যা ক্রমশ বাড়তে থাকে। বন্দি হওয়ার আশঙ্কা এত বেশি করে মাইলসের মনে গিঁথে গিয়েছিল যে সে ক্রমশ মেগানের থেকে আরও দূরে সরে যেতে থাকে। এমন কি কুকিজ দেখিয়েও তাকে আর কাছে আনা যাচ্ছিল না।
সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে শক্তি বলেছিলেন, ‘পুলু এটা রবীন্দ্রনাথ হয়ে গেল না’
বন্দি হওয়ার আশঙ্কায় মেগানকে কাছে ঘেঁষতে দিচ্ছিল না মাইলস
মাইলসকে দেখে মেগান বুঝতে পারে যে সে কী ভীষণ আতঙ্কিত! সমস্যা ক্রমশ বাড়তে থাকে। মাইলসকে সে হারিয়ে ফেলে। অনেক খোঁজাখুঁজির পরে অবশেষে তাকে একবার একটি বাড়ির সামনে আর একবার একটি নির্মাণ ক্ষেত্রে খুঁজে পায়। ততক্ষণে তার জন্য বরাদ্দ কুকিজের প্যাকেটও প্রায় শেষ। এভাবে কখন যে সাত থেকে আট ঘন্টা কেটে গেছে মেগান বুঝতেও পারেনি। তখনও পর্যন্ত তার উদ্দেশ্য সাধনে সে ব্যর্থ। ওদিকে সন্ধে হয়ে আসছে। মাইলসকে সম্ভবত আজ আর ধরাই যাবে না। মেগান বেশ বুঝতে পারছে কোন পেশাদার ট্র্যাপার ছাড়া মাইলসকে ধরা প্রায় অসম্ভব।
এক সপ্তাহের মধ্যে ড্যানির সন্ধান পায় মেগান। ড্যানি স্প্যাঙ্কস অনেক আলোচনা করে (A SafeFurr Place Animal Rescue) অনেক ভেবেচিন্তে মাইলসকে ধরার ছক কষে। মেগান পৌঁছানোর একটু আগে ড্যানি সেই জায়গায় পৌঁছয় যেখানে মেগান শেষ বার মাইলসকে দেখেছিল। ভাগ্যক্রমে মাইলসকে দেখতেও পেয়ে যায়। বেশ বড়সড় তার চেহারা। গায়ের রঙ সাদা।
ড্যানির নজরে আসে একটু দূরে বেড়া দিয়ে ঘেরা একটা বড় জায়গা। সেখানে ঢোকার মুখে একটা দরজাও আছে। ড্যানির মনে হল ওই জায়গাটা একটা ডগ পার্ক হতে পারে। কোন রকমে খাবারের লোভ দেখিয়ে মাইলসকে ডগ পার্কের মধ্যে ডেকে নিয়ে এসে ড্যানি পার্কে ঢোকার দরজাটা লাগিয়ে দেয়। ড্যানির ইচ্ছে মেগান আসতে যতক্ষণ দেরি ততক্ষণ যেন মাইলসকে ডগ পার্কে ধরে রাখা যায়। শেষ পর্যন্ত মেগান এবং কুর্টনিকে আসতে দেখে ড্যানি হাঁফ ছেড়ে বাঁচে। মেগান আগে থেকে কুর্টনিকে চিনত। কুর্টনি বরবার একগুঁয়ে তবে মেগানের বিশ্বাস ছিল সে নিশ্চয় মেগানকে ধরতে পারবে।
মজার ছলে ব্যাঙের মত লাফাতে লাফাতে কুর্টনি এগিয়ে যায়। মাইলস এক জায়গায় দাঁড়িয়েছিল। প্রায় গায়ের কাছে পৌঁছে কুর্টনি বাকলস প্রায় পরিয়ে দিয়েছে মাইলস পিছোতে থাকে। তবে কুর্টনিও নাছোড়বান্দা। শেষ পর্যন্ত বাকলস পরানো গেল। ওহ কি আনন্দ! আনন্দে মেগান কেঁদেই ফেলেছিল।
Let us save animals পেশাদার ট্র্যাপার ছাড়া মাইলসকে ধরা অসম্ভব
মাইলস স্থানুর মত দাঁড়িয়ে। সম্ভবত ওর পায়ের পেশিগুলো কাজ করছিল না। ড্যানি এবং কুর্টনিকে গায়ে মাথায় হাত বুলিয়ে ওর বিশ্বাস অর্জন করার চেষ্টা করছিল। তখনও আতঙ্ক ঘিরেছিল মাইলসকে। ধীরে ধীরে তাকে হাঁটিয়ে গাড়ির কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর কোলপাঁজা করে তুলে দেওয়া হয় গাড়ির পিছন দিকে। গাড়ি ছাড়ার পরে সবাই নিশ্চিন্ত। যাক একটা কঠিন কাজ শেষ পর্যন্ত সম্পূর্ণ করা গেছে। গাড়ি যত এগোচ্ছিল পিছনের জানলা দিয়ে মাইলস দু চোখ ভরে সব কিছু দেখছিল। হয়ত সে ভাবছিল এই জায়গাতে সে এক বছর থেকেছে! এখন সে পাড়ি দিচ্ছে নতুন ঠিকানার উদ্দেশ্যে।
প্রথমে তাকে একটি সারমেয় সংরক্ষণ কেন্দ্রে (Doggy Day Care) নিয়ে যাওয়া হয়। দিন কয়েকের চেষ্টায় মাইলস ভারমুক্ত হয়ে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে শুরু করে। ইতিমধ্যে তাকে পালক মাতার কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল। সেখানে তার অনেক বন্ধু জুটে যায়। তাদের সঙ্গে খেলতে খেলতে মাইলস আরও স্বাভাবিক আরও স্বচ্ছন্দ বোধ করতে থাকে। এখানে তার নিজস্ব একটা বিছানা আছে। সে বুঝতে পারছিল যে সে এখানে নিরাপদ।
মেগানের কথায় ফিরে আসি। নিশ্চিন্ত সেও। অনেক চেষ্টা করে শেষ পর্যন্ত সে মাইলসকে একটা নিশ্চিত ও নিরাপদ আশ্রয় দিতে পেরেছে। এই কাজ সে খুব ভালবাসে। এখনও পর্যন্ত মেগান আড়াইশোর ওপর আশ্রয়হীন বিপর্যস্ত সারমেয়কে নিরাপদ আশ্রয় খুঁজে দিতে পেরেছে। (মেগান, ড্যানি, কুর্টনি – এদের কাজের কথা জনসমক্ষে উপস্থিত করার জন্য অনেক ধন্যবাদ দ্য ডোডোকে)
[fts_instagram instagram_id=17841436645860213 access_token=IGQVJYYldFLXI4SXdhaTcta1BraHBGWnFHVVJlWERqYmYwclpYOG1ZARkdIZAWYyZAEFUbEJpRndkNU93T0QyUVFRdjN0VEVIb2lIYV85bmdOaWVKM3ZAoMXlIYW1vcjg1MnZAfOW14OGVB pics_count=6 type=basic super_gallery=yes columns=3 force_columns=no space_between_photos=1px icon_size=65px hide_date_likes_comments=no]
