বিনোদন
ছবি বিশ্বাস হাসপাতালে বিধান রায় বললেন পোস্টমর্টেম হবে না

শরৎ পণ্ডিত একবার কলকাতায় এসেছেন। উঠেছেন আমহার্স্ট স্ট্রীটের একটি মেসবাড়িতে। একদিন অবসর সময়ে শিয়ালদহের দিকে হেঁটে চলেছেন। হঠাৎ চোখ পড়ল এক সিনেমা হলের সামনে জড় হওয়া ভিড়ের দিকে। হলে তখন ‘দাদাঠাকুর’ ছবি চলছিল। যাঁর জীবন নিয়ে ছবি তৈরি হয়েছে, স্বয়ং সেই শরৎ পণ্ডিত হলের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন। অথচ কেউ তাঁর দিকে ফিরেও তাকাচ্ছে না। তাই দেখে শরৎ পণ্ডিতের সঙ্গী বললেন, ‘এ কিরকম কথা। আপনি থাকতে ছবি বিশ্বাস অভিনয় করেছে’। দাদাঠাকুর বললেন, ‘ছবি পারবে বলেই ওকে নিয়েছে…’
ছবি বিশ্বাসের প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি ‘অন্নপূর্ণার মন্দির’ পরিচালক ছিলেন সেকালের বিখ্যাত অভিনেতা তিনকড়ি চক্রবর্তী
ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউট হলে অভিনয় করতে গিয়ে দ্বিজেন্দ্রলাল রায়, নরেশ মিত্র, শিশির ভাদুড়ি প্রমুখ দিকপাল অভিনেতাদের সান্নিধ্যে এসেছিলেন। এভাবেই চলচ্চিত্র প্রযোজক প্রিয়নাথ গঙ্গোপাধ্যায়ের নজরে পড়েছিলেন। তিনি ডেকে নিয়ে গিয়ে সুযোগ দিলেন ‘অন্নপূর্ণার মন্দির’ ছবিতে। ছবি পরিচালনা করেছিলেন সেই সময়ের বিখ্যাত অভিনেতা তিনকড়ি চক্রবর্তী। ছবি মুক্তি পেয়েছিল উনিশশো সালের তেরো জুন। ছবিটি অবশ্য বাণিজ্যিক দিক থেকে সফল হতে পারেনি। এর পরে আরও ছয়-সাতটি ছবিতে সুযোগ পেলেও ছবি বিশ্বাসের জীবনে সাফল্য সেভাবে তখনও ধরা দেয়নি। ততদিনে তিনি পূর্বতন জীবিকা থেকেও সরে এসেছেন। ফলে অভিনয় জীবনে প্রতিষ্ঠা পেতে মরিয়া হয়ে উঠলেন।
মহুয়ার মৃত্যু কি নিছক দুর্ঘটনা না হত্যা না কি আত্মহত্যা
ছাত্রজীবন কেটেছে হিন্দু স্কুল, প্রেসিডেন্সি কলেজ ও বিদ্যাসাগর কলেজে। প্রথম দিকে কাঁকুড়গাছি নাট্যসমাজ, শিকদার বাগান স্ট্রিটের বান্ধবসমাজ এসব জায়গায় শখের যাত্রাপালায় অভিনয় করে খ্যাতি অর্জন করেন। তবে শিক্ষিত পরিবারের ছেলের যাত্রা থিয়েটার নিয়ে বেশি মাতামাতি করা অভিভাবকরা অপছন্দ করতেন। জীবিকার সন্ধানে এক এক করে বীমা কোম্পানি, বেঙ্গল টেলিফোন কোম্পানি ইত্যাদি অফিসে চাকরি থেকে শুরু করে পাটের ব্যবসা ইত্যাদি নানা পেশায় যুক্ত থেকে কিছুতেই মন বসাতে পারছিলেন না। যদিও ব্যবসা-চাকরির পাশাপাশি অবশ্য অভিনয় কখনও ছাড়েননি।
ছবি বিশ্বাস প্রথম দিকে অভিনয় করতেন শখের যাত্রাপালায় কাঁকুড়গাছির নাট্যসমাজ, শিকদার বাগানের বান্ধবসমাজ প্রভৃতি দলে
সেদিন বাংলা ছবির উত্তম-সুচিত্রা-সুপ্রিয়া-সাবিত্রী-সন্ধ্যার অজস্র চিত্রকাহিনীতে পিতৃবিয়োগ হয়েছিল! মাত্র বাষট্টি বছরে শেষ হয়ে গিয়েছিল এক নক্ষত্রসম অভিনয় জীবন। একটি মানুষ একার চেষ্টায় তাঁর অভিনয়ের গুণে বাংলা ছবিকে স্বহস্তে পৌঁছে দিয়েছিলেন আধুনিকতার আঙিনায় সোজা আন্তর্জাতিক স্তরে। বাঙালি সিনেমা নিয়ে কথা বলতে গেলে অনেকেই ‘যুগ’ শব্দটি বলতে ভালবাসেন, যেমন রবীন্দ্র যুগ, অহীন্দ্র যুগ। সেকালের থিয়েটার এবং সিনেমাপ্রেমীরা বলেন, অহীন্দ্র চৌধুরী-শিশিরকুমার ভাদুড়ীর পরে বাংলা অভিনয়ের মঞ্চে রচিত হয়েছিল ছবি বিশ্বাস যুগ।
এগারো জুন উনিশশো বাষট্টি সাল। আর জি কর হাসপাতাল লোকে লোকারণ্য। এত ভিড় যে ঢোকা এবং বেরোনো দুদিকের পথই বন্ধ। থিয়েটার থেকে সিনেমা জগতের সবাই আসছেন তবে হাসপাতালে ঢুকতে পারছেন না। চারপাশে উদ্বিগ্ন, থমথমে মুখের সারি। প্রশ্নের গুঞ্জন। কী হয়েছিল? কী ভাবে হল অ্যাক্সিডেন্ট? ধবধবে সাদা অ্যাম্বাসাডর, সেটা নাকি তুবড়ে গিয়েছে? গাড়িতে ড্রাইভার ছিল না? মদ খেয়ে গাড়ি চালাচ্ছিলেন? ছবি বিশ্বাস নিজে গাড়ি চালাচ্ছিলেন? গোটা হাসপাতাল সহ সারা কলকাতা শহরে লোকের মুখে এমন নানা প্রশ্ন ঘুরে ফিরে বেড়াচ্ছিল।
অহীন্দ্র চৌধুরী-শিশিরকুমার ভাদুড়ার পরে বাংলা ছবির জগতে সূচনা হয়েছিল ছবি বিশ্বাস যুগ
মানুষের মনে গেঁথে আছে বৈচিত্রময় নানা ভূমিকায় অভিনয় করেছেন সেই ছবি বিশ্বাসের শব ব্যবচ্ছেদের পরে কেমন দেখতে হবে! কিভাবে সেই দৃশ্য গ্রহণ করবে তাঁর অগণিত ভক্তবৃন্দ। দুই ভুরুর একটি তুলে, অন্যটি নামিয়ে আশ্চর্য কৌশলে ডায়লগ বলতেন। সংলাপ দিয়ে অভিনয়কে অতুলনীয় জীবন্ত করে তুলতেন এমনই ছিল তাঁর শিল্পকর্ম আর তার সাথে সেই অননুকরণীয় কণ্ঠ। বিশু, হারান, মাস্টারমশাই, রহমত, দাদাঠাকুর, বিশ্বম্ভর রায়, কালীকিঙ্কর, ইন্দ্রনাথরা বুঝি সেদিন ঢুকতে চেয়েও ঢুকতে পারছিলেন না ওই ছ’ফুট, ঋজু শরীরটায়। সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে মুখ্যমন্ত্রী বিধানচন্দ্র রায় ঘোষণা করেছিলেন, ছবি বিশ্বাসের পোস্টমর্টেম হবে না।
বিনোদন
মোনালি বলেছিলেন তিনি বিবাহিত কিন্তু সত্যি কি তাই

জন্ম ০৩ নভেম্বর ১৯৮৫
কলকাতা পশ্চিমবঙ্গ ভারত
পিতা শক্তি ঠাকুর
মাতা মিনতি ঠাকুর
দিদি মেহুলি ঠাকুর
জীবন সঙ্গী মাইখ রিখটার (অসমর্থিত)
সাল ২০২০। একটি জনপ্রিয় সর্ব ভারতীয় সংবাদপত্রের পাতা। সে পাতায় ছাপা হয়েছিল মোনালির একটি সাক্ষাৎকার। ২০২০ সালে প্রকাশিত সেই সাক্ষাৎকারে মোনালি স্বীকার করেছিলেন যে তিনি বিবাহিত। তার তিন বছর আগে অর্থাৎ ২০১৭ সালে তিনি নাকি বিয়ে করেছেন। পাত্র এক সুইডিশ রেস্তোরাঁ মালিক। নাম মাইক রিখটার।
২০১৭ থেকে ২০২০। তিন বছর মোনালি তাঁর বিয়ে গোপন করেছিলেন। না কোন সংবাদ মাধ্যম। না কোন সমাজ মাধ্যম। কোথাও প্রকাশিত হয়নি মোনালির বিয়ের খবর। বিয়ের আংটি কখনও ভুলবশত ইনস্টাগ্রামে দেওয়া ছবিতে দেখা যেত। তার থেকে অনেকে মোনালির বিয়ের খবর জানতে উৎসুক থাকতেন। কিন্তু মাইক এবং মোনালি দুজনেই অত্যন্ত সফল ভাবে তাঁদের বিয়ের খবর গোপন রেখেছিলেন।
আরও পড়ুন: টিভি থেকে সিনেমা এবং রাজনীতি চিরঞ্জিত সবেতে সফল
এবার আসা যাক আর একটি জনপ্রিয় বাংলা সংবাদপত্রের প্রসঙ্গে। তারিখ ১ আগস্ট ২০১৭। সেখানেও ছাপা হয়েছিল মোনালির একটি সাক্ষাৎকার। শুরুতে বিয়ে নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল। কিন্তু মোনালি বিয়ের খবর অস্বীকার করেছেন। বলেছিলেন, ‘বিয়ে নিয়ে এত বাড়াবাড়ির কি আছে? বিয়ে হলে জানাবেন।’ এমন কি বয়ফ্রেণ্ডের নাম পর্যন্ত বলতে চাননি। কেন এত গোপনীয়তা, সেটা মোনানিই বলতে পারবেন।
মোনালি শক্তি ঠাকুরের ছোট মেয়ে। জন সমক্ষে প্রথম আবির্ভাব গায়িকা রূপে। অভিনয় তার পরে। বাংলা টেলিভিশন ধারাবাহিক ‘আলোকিত এক ইন্দু’তে প্রথম অভিনয়। মুখ্য চরিত্র ইন্দুবালার ভূমিকায়। এরপর অভিনয় করেছেন আরও দু-একটি টেলিভিশন ধারাবাহিকে। এক দিন রাজা সেন প্রস্তাব দিলেন তাঁর ছবিতে অভিনয়ের জন্য। ছবির নাম ‘কৃষ্ণকান্তের উইল।’ মোনালিকে, রাজা সেন ভ্রমরের চরিত্রে ভেবেছিলেন।
বিনোদন
টিভি থেকে সিনেমা এবং রাজনীতি চিরঞ্জিত সবেতে সফল

দীপক ওরফে চিরঞ্জিত চক্রবর্তী বাংলা চলচ্চিত্রের এক সফল অভিনেতা এবং পরিচালক। তিনি প্রখ্যাত কার্টুনিস্ট শায়লা চক্রবর্তীর ছেলে। এছাড়াও তিনি একজন রাজনীতিবিদ এবং পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার সদস্য।
চলচ্চিত্র তালিকা
| সাল | চলচ্চিত্র/ ধারাবাহিক | চরিত্র | মন্তব্য/পুরস্কার |
| ১৯৮১ | সোনায় সোহাগা | অভিনেতা | |
| ১৯৮৯ | মর্যাদা | পরিচালক | |
| ১৯৯৪ | ফিরিয়ে দাও | পরিচালক | |
| ১৯৯৫ | কেঁচো খুঁড়তে কেউটে | অভিনেতা এবং পরিচালক | |
| ১৯৯৫ | সংসার সংগ্রাম | পরিচালক | |
| ১৯৯৬ | ভয় | পরিচালক | |
| ২০০০ | বস্তির মেয়ে রাধা | পরিচালক | |
| ২০০২ | মানুষ অমানুষ | পরিচালক | |
| ২০১৪ | চতুষ্কোণ | অভিনেতা | |
| ২০১৬ | ষড়রিপু | অভিনেতা | |
| ২০১৬ | কিরীটী রায় | কিরীটী রায় | অভিনেতা (নাম ভূমিকা) |
আরও পড়ুন: পদ্মিনীর নাচ দেখে রাজ কাপুর তাঁর ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন
বিনোদন
নাচ দেখে রাজ কাপুর বলেছিলেন আমার ছবিতে অভিনয় করবে

ছোটবেলায় নাচতে ভালো লাগত। আশাজি সম্পর্কে মামি। মামির গান খুব পছন্দ। মামির গানে নাচতে দারুণ লাগে। নাচের মুদ্রা কিন্তু নিজস্ব। সে মুদ্রা কেউ শেখায়নি। গান আশাজির, স্টেপ নিজের। কোন এক অনুষ্ঠানে, পদ্মিনী এভাবেই নাচছিলেন। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি রাজ কাপুর। দেখছিলেন পদ্মিনীর নাচ। নাচ দেখে রাজ কাপুর বলেছিলেন আমার ছবিতে অভিনয় করবে। পদ্মিনীর তখন কি এমন বয়স। বলিষ্ঠ স্বরে বলেছিলেন, আমি তো অভিনয় করি। এই আত্মবিশ্বাস রাজের ভালো লেগেছিল। পদ্মিনী মনে করেন, সম্ভবত এই কারণে রাজ কাপুর তাঁকে ‘সত্যম শিবম সুন্দরম’ ছবিতে নিয়েছিলেন।
পিতা পন্ধরীনাথ কোলহাপুরী। মা নিরুপমা কোলহাপুরী। তিন বোনের মধ্যে পদ্মিনী কোলহাপুরী দ্বিতীয়। বড় বোন শিভাঙ্গী কোলহাপুরীকে বিয়ে করেছেন শক্তি কাপুর। ছোট বোন তেজস্বিনী কোলহাপুরীও হিন্দি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন।
পদ্মিনীর ঠাকুরদা পণ্ডিত কৃষ্ণ রাও কোলহাপুরী এবং লতাজি, আশাজির পিতা পণ্ডিত দীননাথ মঙ্গেশকর ‘বলবন্ত নাটক আকাদেমি’তে এক সাথে কাজ করেছেন। পদ্মিনীর মা নিরুপমা (পন্ধরীনাথের স্ত্রী) ছিলেন পণ্ডিত দীননাথ মঙ্গেশকরের সৎ বোন। সেই সূত্রে, পদ্মিনী আবার লতাজি এবং আশাজির ভাগ্নী।
আরও পড়ুন: ঋষিকেশ বহিরাগত হয়েও বলিউডে জায়গা করে নিয়েছিলেন
পদ্মিনীর মা নিরুপমা ছিলেন কোঙ্কণী ব্রাহ্মণ সন্তান। বসবাস ছিল কর্ণাটকের ম্যাঙ্গালোরে। বাবার তরফে, পদ্মিনীর পূর্ব পুরুষের বসবাস ছিল মহারাষ্ট্রের কোলহাপুরে। মূলত পিতৃ সূত্রে, পদ্মিনীর নামের সাথে যুক্ত হয়েছে কোলহাপুর।
মধ্যবিত্ত মহারাষ্ট্রীয় কোঙ্কণী পরিবারের সন্তান, পদ্মিনীর ছোট বেলা কেটেছে প্রবল দারিদ্রের মধ্যে। পদ্মিনী দেখেছে, সংসার চালাতে বাবা কেমন হিমশিম খেতেন। আয় বাড়াতে, পন্ধরীনাথ গান শেখাতে শুরু করেছিলেন। তাতে অবশ্য সংসারের হাল ফিরেছিল। তবে তা সেরকম কিছু নয়।

