বিনোদন
শমিত ভঞ্জ বাঙালির আপনজন ঘরে ঢুকে রীতিমত হুমকি দিয়েছিলেন

অভিনেতা শমিত ভঞ্জ বাঙালির আপনজন ছিলেন। অভিনয় প্রতিভাসম্পন্ন শমিতের বাবার ইচ্ছে ছিল ছেলে এঞ্জিনীয়ার হোক। কিন্তু ছেলের ইচ্ছে অভিনয় করবে। পাড়া আর স্কুলের নাটকে অভিনয় করতে গিয়ে মাথায় ঢুকেছিল সিনেমার ভূত। পলিটেকনিক পড়া ছেড়ে সেই ভূতের ঠেলায় ছেলে এবার কলকাতায় পালালো। সেখানে এসে ঢুকল সবিতাব্রত দত্তের দল ‘রূপকার’-এ। কিছু নাটকে ছেলে অভিনয়ও করল। এবার শুরু হল টালিগঞ্জে ঘোরাঘুরি। একদিন একটি ভিড়ের দৃশ্যে সুযোগ এলো অভিনয়ের। ভূমেন রায়ের ছবি ‘নিশাচর’। কি আশ্চর্য, সেই ভিড়ের দৃশ্যে আরও যারা ছিলেন, তাদের থেকে তাঁকে বেশি খাতির করা হল। কারণটা ছিল বেশ মজার। শুটিঙে শমিত স্যুট পরেছিলেন আর সে কারণে খাতিরও পেয়েছিলেন বেশি।
শমিত ভঞ্জ বাঙালির আপনজন ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ দিয়েছিলেন তপন সিংহ
পরের অভিনয় বিভূতি লাহার ছবি ‘বাদশা’। এখানেও সেই ক্রাউড সিন। এভাবে ক্রাউড সিনে অভিনয় করে কি আর আশ ভরে! একদিন মরিয়া হয়ে ঢুকতে চাইলেন তপন সিংহের অফিসে। ঢোকার মুখে আটকালেন তপন সিংহের সহকারী বলাই সেন। এত সহজে হাল ছাড়ার পাত্র ছিলেন না শমিত। আবার একদিন সুযোগ বুঝে টেকনিশিয়ান্স স্টুডিয়োয় তপনবাবুর ঘরে জোর করে ঢুকে পড়লেন। সোজা তপন সিংহর সামনে গিয়ে হুমকি দিয়ে বললেন, “কাজ করব, কাজ দিন।” উত্তরে তপনবাবু বলেছিলেন, “এখন তো ছবি আরম্ভ হয়ে গেছে।…”
আরও পড়ুন: movies banned in India ভারতে নিষিদ্ধ কিন্তু বিদেশে সুপারহিট
তপন সিংহ সেদিন শমিতকে ফিরিয়ে দিলেও পরে তাঁকে হতাশ করেননি। ‘হাটে বাজারে’ ছবিতে এক মোটর মেকানিকের চরিত্রে নিয়েছিলেন শমিতকে। সেই ছবি করতে গিয়ে আলাপ হয় ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে। কলকাতায় শমিতের চালচুলোহীন অবস্থার কথা জেনে ভানু বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের বাড়ির মেজেনাইন ফ্লোরের একটি ঘরে তাঁর থাকার ব্যবস্থা করেছিলেন। কৃতজ্ঞ শমিতের মুখে তাই প্রায় শোনা যেত, ভানুদা না থাকলে হয়তো তিনি হারিয়েই যেতেন।
আপনজন ছবিতে ‘ছেনো’-র চরিত্রে অভিনয় প্রশংসিত হলেও শমিতকে পরিচালকেরা কাজ দিতেন না
তপন সিংহের ‘আপনজন’ ছবিতে ‘ছেনো’-র চরিত্রে অভিনয় করে শমিত প্রভূত প্রশংসা পেয়েছিলেন। অবশ্য তাতে ভাগ্য খুব একটা বদলায়নি। তাঁর নিজের কথায়, “পরিচালকেরা কাজের খুব প্রশংসা করতেন অথচ ছবিতে কাজ দেওয়ার ব্যাপারে চুপ করে থাকতেন।…আমি যেখানেই যেতাম পাবলিক আমাকে ঘিরে ধরত। অথচ আমার তখন কাজও নেই, পয়সাও নেই। সমস্যা হত এই যে আমি আর ট্রামে-বাসে চড়তে পারতাম না। দেখলেই পাবলিক ছুটে আসত। বাধ্য হয়ে ট্যাক্সি চড়তে হত, অথচ সেটা ছিল খুবই খরচসাপেক্ষ।”
শচীন অধিকারীর ‘শপথ নিলাম’ ছবিতে বিপ্লবী শহিদ দীনেশ মজুমদারের চরিত্রে শুটিং করার সময়ই একদিন রবি ঘোষ খবর দিয়েছিলেন যে মানিকদা তাঁকে খুঁজছেন। শমিতকে, সত্যজিতের লেক টেম্পল রোডের বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছিলেন শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায়। এরপরই বাংলা সিনেমায় জন্ম নিয়েছিল আরও একটি অনবদ্য চরিত্র ‘হরি’। শমিতের নিজের কথায়, “যে মুহূর্তে খবর ছড়াল সত্যজিৎ রায় আমাকে নিয়েছেন, অমনি যেন টালিগঞ্জের লোকেরা নড়েচড়ে বসল।”
‘আপনজন’-এর সাফল্যের পরপরই শমিতের পরিবার তমলুক ছেড়ে চলে এসেছিলেন কলকাতার ইন্দ্রাণী পার্কের বাড়িতে। ১৯৯৮-’৯৯ সাল নাগাদ তাঁর কোলন ক্যানসার ধরা পড়ে। শেষের দিনগুলি যখন এগিয়ে আসছিল, তখনই গৌতম ঘোষ ‘আবার অরণ্যে’ ছবির কথা ভেবেছিলেন। ছবিতে একটি দৃশ্যে সংলাপে শমিতে বলেছিলেন, “এখন আমার এক পা সংসারে আর এক পা শ্মশানে।” ২৪ জুলাই উত্তমকুমারের মৃত্যুদিন। ২০০৩ সালের একই দিনে আমাদের ছেড়ে চলে যান শমিত ভঞ্জ, যিনি বাংলা ছবির দ্বিতীয় উত্তম হয়ে উঠতে পারতেন।
বিনোদন
মোনালি বলেছিলেন তিনি বিবাহিত কিন্তু সত্যি কি তাই

জন্ম ০৩ নভেম্বর ১৯৮৫
কলকাতা পশ্চিমবঙ্গ ভারত
পিতা শক্তি ঠাকুর
মাতা মিনতি ঠাকুর
দিদি মেহুলি ঠাকুর
জীবন সঙ্গী মাইখ রিখটার (অসমর্থিত)
সাল ২০২০। একটি জনপ্রিয় সর্ব ভারতীয় সংবাদপত্রের পাতা। সে পাতায় ছাপা হয়েছিল মোনালির একটি সাক্ষাৎকার। ২০২০ সালে প্রকাশিত সেই সাক্ষাৎকারে মোনালি স্বীকার করেছিলেন যে তিনি বিবাহিত। তার তিন বছর আগে অর্থাৎ ২০১৭ সালে তিনি নাকি বিয়ে করেছেন। পাত্র এক সুইডিশ রেস্তোরাঁ মালিক। নাম মাইক রিখটার।
২০১৭ থেকে ২০২০। তিন বছর মোনালি তাঁর বিয়ে গোপন করেছিলেন। না কোন সংবাদ মাধ্যম। না কোন সমাজ মাধ্যম। কোথাও প্রকাশিত হয়নি মোনালির বিয়ের খবর। বিয়ের আংটি কখনও ভুলবশত ইনস্টাগ্রামে দেওয়া ছবিতে দেখা যেত। তার থেকে অনেকে মোনালির বিয়ের খবর জানতে উৎসুক থাকতেন। কিন্তু মাইক এবং মোনালি দুজনেই অত্যন্ত সফল ভাবে তাঁদের বিয়ের খবর গোপন রেখেছিলেন।
আরও পড়ুন: টিভি থেকে সিনেমা এবং রাজনীতি চিরঞ্জিত সবেতে সফল
এবার আসা যাক আর একটি জনপ্রিয় বাংলা সংবাদপত্রের প্রসঙ্গে। তারিখ ১ আগস্ট ২০১৭। সেখানেও ছাপা হয়েছিল মোনালির একটি সাক্ষাৎকার। শুরুতে বিয়ে নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল। কিন্তু মোনালি বিয়ের খবর অস্বীকার করেছেন। বলেছিলেন, ‘বিয়ে নিয়ে এত বাড়াবাড়ির কি আছে? বিয়ে হলে জানাবেন।’ এমন কি বয়ফ্রেণ্ডের নাম পর্যন্ত বলতে চাননি। কেন এত গোপনীয়তা, সেটা মোনানিই বলতে পারবেন।
মোনালি শক্তি ঠাকুরের ছোট মেয়ে। জন সমক্ষে প্রথম আবির্ভাব গায়িকা রূপে। অভিনয় তার পরে। বাংলা টেলিভিশন ধারাবাহিক ‘আলোকিত এক ইন্দু’তে প্রথম অভিনয়। মুখ্য চরিত্র ইন্দুবালার ভূমিকায়। এরপর অভিনয় করেছেন আরও দু-একটি টেলিভিশন ধারাবাহিকে। এক দিন রাজা সেন প্রস্তাব দিলেন তাঁর ছবিতে অভিনয়ের জন্য। ছবির নাম ‘কৃষ্ণকান্তের উইল।’ মোনালিকে, রাজা সেন ভ্রমরের চরিত্রে ভেবেছিলেন।
বিনোদন
টিভি থেকে সিনেমা এবং রাজনীতি চিরঞ্জিত সবেতে সফল

দীপক ওরফে চিরঞ্জিত চক্রবর্তী বাংলা চলচ্চিত্রের এক সফল অভিনেতা এবং পরিচালক। তিনি প্রখ্যাত কার্টুনিস্ট শায়লা চক্রবর্তীর ছেলে। এছাড়াও তিনি একজন রাজনীতিবিদ এবং পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার সদস্য।
চলচ্চিত্র তালিকা
| সাল | চলচ্চিত্র/ ধারাবাহিক | চরিত্র | মন্তব্য/পুরস্কার |
| ১৯৮১ | সোনায় সোহাগা | অভিনেতা | |
| ১৯৮৯ | মর্যাদা | পরিচালক | |
| ১৯৯৪ | ফিরিয়ে দাও | পরিচালক | |
| ১৯৯৫ | কেঁচো খুঁড়তে কেউটে | অভিনেতা এবং পরিচালক | |
| ১৯৯৫ | সংসার সংগ্রাম | পরিচালক | |
| ১৯৯৬ | ভয় | পরিচালক | |
| ২০০০ | বস্তির মেয়ে রাধা | পরিচালক | |
| ২০০২ | মানুষ অমানুষ | পরিচালক | |
| ২০১৪ | চতুষ্কোণ | অভিনেতা | |
| ২০১৬ | ষড়রিপু | অভিনেতা | |
| ২০১৬ | কিরীটী রায় | কিরীটী রায় | অভিনেতা (নাম ভূমিকা) |
আরও পড়ুন: পদ্মিনীর নাচ দেখে রাজ কাপুর তাঁর ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন
বিনোদন
নাচ দেখে রাজ কাপুর বলেছিলেন আমার ছবিতে অভিনয় করবে

ছোটবেলায় নাচতে ভালো লাগত। আশাজি সম্পর্কে মামি। মামির গান খুব পছন্দ। মামির গানে নাচতে দারুণ লাগে। নাচের মুদ্রা কিন্তু নিজস্ব। সে মুদ্রা কেউ শেখায়নি। গান আশাজির, স্টেপ নিজের। কোন এক অনুষ্ঠানে, পদ্মিনী এভাবেই নাচছিলেন। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি রাজ কাপুর। দেখছিলেন পদ্মিনীর নাচ। নাচ দেখে রাজ কাপুর বলেছিলেন আমার ছবিতে অভিনয় করবে। পদ্মিনীর তখন কি এমন বয়স। বলিষ্ঠ স্বরে বলেছিলেন, আমি তো অভিনয় করি। এই আত্মবিশ্বাস রাজের ভালো লেগেছিল। পদ্মিনী মনে করেন, সম্ভবত এই কারণে রাজ কাপুর তাঁকে ‘সত্যম শিবম সুন্দরম’ ছবিতে নিয়েছিলেন।
পিতা পন্ধরীনাথ কোলহাপুরী। মা নিরুপমা কোলহাপুরী। তিন বোনের মধ্যে পদ্মিনী কোলহাপুরী দ্বিতীয়। বড় বোন শিভাঙ্গী কোলহাপুরীকে বিয়ে করেছেন শক্তি কাপুর। ছোট বোন তেজস্বিনী কোলহাপুরীও হিন্দি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন।
পদ্মিনীর ঠাকুরদা পণ্ডিত কৃষ্ণ রাও কোলহাপুরী এবং লতাজি, আশাজির পিতা পণ্ডিত দীননাথ মঙ্গেশকর ‘বলবন্ত নাটক আকাদেমি’তে এক সাথে কাজ করেছেন। পদ্মিনীর মা নিরুপমা (পন্ধরীনাথের স্ত্রী) ছিলেন পণ্ডিত দীননাথ মঙ্গেশকরের সৎ বোন। সেই সূত্রে, পদ্মিনী আবার লতাজি এবং আশাজির ভাগ্নী।
আরও পড়ুন: ঋষিকেশ বহিরাগত হয়েও বলিউডে জায়গা করে নিয়েছিলেন
পদ্মিনীর মা নিরুপমা ছিলেন কোঙ্কণী ব্রাহ্মণ সন্তান। বসবাস ছিল কর্ণাটকের ম্যাঙ্গালোরে। বাবার তরফে, পদ্মিনীর পূর্ব পুরুষের বসবাস ছিল মহারাষ্ট্রের কোলহাপুরে। মূলত পিতৃ সূত্রে, পদ্মিনীর নামের সাথে যুক্ত হয়েছে কোলহাপুর।
মধ্যবিত্ত মহারাষ্ট্রীয় কোঙ্কণী পরিবারের সন্তান, পদ্মিনীর ছোট বেলা কেটেছে প্রবল দারিদ্রের মধ্যে। পদ্মিনী দেখেছে, সংসার চালাতে বাবা কেমন হিমশিম খেতেন। আয় বাড়াতে, পন্ধরীনাথ গান শেখাতে শুরু করেছিলেন। তাতে অবশ্য সংসারের হাল ফিরেছিল। তবে তা সেরকম কিছু নয়।

